Declaration

যুব ঘোষণাপত্র ২০১৮

[সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে গ্রহণের জন্য চূড়ান্ত খসড়া]

 

 

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ আমরা বাংলাদেশের যুব সমাজ। তারুণ্যের উদ্যমী শক্তি ও দেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে উজ্জীবিত হয়ে আমরা এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ-এর আহ্বানে “যুব সম্মেলন ২০১৮ – বাংলাদেশ ও এজেন্ডা ২০৩০: তারুণ্যের প্রত্যাশা” শীর্ষক আজকের মিলনমেলায় একত্র হয়েছি। মেধা, উদ্ভাবনী শক্তি ও কর্মোদ্যোগ দিয়ে ২০৩০ বৈশ্বিক এজেন্ডার আলোকে বাংলাদেশকে বদলে দেবো – এ প্রত্যয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা নানান ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, শ্রেণি ও পেশার দেড় সহস্রাধিক যুব প্রতিনিধি এ সম্মেলনের ডাকে আজ সাড়া দিয়েছি।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের যে রূপকল্প নিয়ে এসডিজি’র বৈশ্বিক এজেন্ডার যাত্রা, আমরা বিশ্বাস করি তার সাথে বাংলাদেশের প্রগতিশীল ও অগ্রাভিমুখী রূপান্তর একই সূত্রে গাঁথা। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কাউকে পেছনে রাখা যাবে না – এসডিজি’র এ বৈশ্বিক অভীষ্ট বাস্তবায়নে সারা বিশ্বেই আজ তরুণরা বহুমুখী আন্দোলনের মাধ্যমে সক্রিয়। বাংলাদেশের যুব সমাজ নিজেকে এ পরিবর্তনমুখী বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে মনে করে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুব সমাজ, যাদের বয়স আঠারো থেকে পঁয়ত্রিশ, এবং আমরাই দেশের প্রধান শ্রমশক্তি, যারা ২০৩০ সালেও কর্মোপযোগী থাকবো এবং দেশকে নেতৃত্ব দেবো। অথচ বর্তমানে দেশের মোট বেকার জনগোষ্ঠীর তিন-চতুর্থাংশ যুব সমাজের অন্তর্গত।

ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, শ্রেণি, শিক্ষা, পেশা এবং ভৌগোলিক অবস্থান ভেদে বহুবিধ বৈচিত্র্যকে ধারণ করে আছে বাংলাদেশের যুব সমাজ। মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের যুব সমাজ পালন করেছে অগ্রণী ভূমিকা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, পরিবেশ রক্ষা, সামাজিক আন্দোলন – সব ক্ষেত্রে স্বাধীনতা-পরবর্তী যে অর্জন, তাতে রয়েছে আমাদের যুব সমাজের উল্লেখযোগ্য অবদান।

কিন্তু একই সাথে এটাও বাস্তবতা যে, বর্তমানে দেশের মোট বেকার জনগোষ্ঠির দুই তৃতীয়াংশ যুব সমাজ। মানসম্মত শিক্ষার ঘাটতি এবং কর্মোপযোগী দক্ষতা গড়ার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় শিক্ষা অনেক ক্ষেত্রেই কাঙ্ক্ষিত সুফল বয়ে আনছে না। নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে তোলার মতো আর্থিক সহায়তাও যুব সমাজের জন্য সুলভ নয়। নীতিনির্ধারণে যুব সমাজের প্রয়োজনীয় প্রতিনিধিত্ব না থাকায় যুব সমস্যার সমাধানে যুব সমাজের অবদান থেকে যাচ্ছে সীমিত। যথাযথ সুযোগের অভাবে যুব সমাজের একাংশের মধ্যে জন্ম নেয় হতাশা। পরিণতিতে তাদের কেউ কেউ হয়ে পড়ে মাদকাসক্ত এবং কেউবা জড়িয়ে পড়ে চরমপন্থায়। এর ফলে তাদের অপার সম্ভাবনা নষ্ট হয়, তারা হয় দেশের বোঝা আর সমাজের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ।

কিন্তু আমরা চাই দক্ষ, জ্ঞানবান ও সুনাগরিক হিসেবে এসডিজির অভীষ্ট ও লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ গড়ায় ও দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করতে। উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে যুব সমাজের কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিতে হবে – আমাদের এ দৃঢ় উচ্চারণ আমরা নীতি-নির্ধারকদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।

এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে আমাদের উপলব্ধি:

  • আমাদের জ্ঞান বলয় সম্প্রসারিত করার মাধ্যমে দেশ, অঞ্চল ও বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণা আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সে সম্পর্কে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। আমরা জানি, এটি হবে একটি চলমান প্রক্রিয়া।
  • এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার, সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে যুব সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে।
  • সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের বিভিন্ন সমস্যাকে চিহ্নিত করে তার প্রতিকার ও সমাধানের জন্য যুব সমাজকে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে; কারও অপেক্ষায় না থেকে আমাদেরকে নিজেদের জায়গা নিজেদেরকেই তৈরি করে নিতে হবে।
  • এসডিজির আলোকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যুব সমাজকে মানবিক গুণাবলী ও নৈতিক মূল্যবোধে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে হবে।

 

যুব সমাজের মেধা ও শক্তির পূর্ণ বিকাশ করে বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের অংশগ্রহণকে শক্তিশালী করার জন্য এ সম্মেলন থেকে আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই:

১.   এসডিজি অভীষ্টের সমস্ত লক্ষ্যের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য যুব সমাজসহ সকলের অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ শুদ্ধাচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

২.   উন্নয়ন দর্শনে তথা সরকারি নীতিমালা ও বাজেটে মানসম্মত শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং এর উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যে:

ক.   শিক্ষা যেন হয় কর্মমুখী, আর এ লক্ষ্যে দক্ষতা বৃদ্ধিকে রাখতে হবে সকল শিক্ষা কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে।

খ.   শিক্ষা পাঠ্যক্রমকে করতে হবে আধুনিক ও পরিবর্তনশীল, অর্থনীতির চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

গ.   শিক্ষার বহুমুখী ধারা পরিহার করে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

ঘ.   শিক্ষকদের জন্য যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঙ.   গ্রাম ও শহরের মধ্যে শিক্ষার গুণগত পার্থক্য রাখা যাবে না।

চ.   শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে আধুনিকায়ন করতে হবে; শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে।

৩.   রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় যুব সমাজের উদ্ভাবনী শক্তিকে বিকশিত করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রতিটি জেলায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও উদ্ভাবন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া অঞ্চলকে প্রাধিকার দিতে হবে।

৪.   মেধার ভিত্তিতে কর্মসংস্থান ও দক্ষতার নিরীখে পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে সুবিধাবঞ্চিত তথা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা থাকতে হবে যেন উন্নয়নের মূলধারা থেকে তারা বাদ না যায়।

৫.   নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রণোদনা দিতে হবে। এ জন্য জাতীয় দক্ষতা বৃদ্ধি নীতিমালা ২০১১-তে যুব নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ধারাটি সংযুক্ত করতে হবে।

৬.   নারীদের প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, কার্যকর আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনসমূহের যুগোপযোগীকরণ, এবং এসব আইনের যথোপযুক্ত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

৭.   পাহাড় ও সমতলের আদিবাসি, দলিত এবং তৃতীয় লিঙ্গের যুব সমাজের শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসুযোগ সৃষ্টির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

৮.   জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার সনদ (সিআরপিডি) সংযোজন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।

৯.   হাওর, চরাঞ্চল ও উপকূলের যুব সমাজের উন্নয়নের জন্য বিশেষ প্রকল্প ও তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে।

১০. যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে:

ক.   যুব ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

খ.   যৌক্তিক সুদ নির্ধারণ করে যুব উন্নয়ন দপ্তরের যুব ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে এবং তার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।

গ.   ব্যাংক ও সকল অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের ঋণ কার্যক্রমে যুব সমাজের জন্য বিশেষ স্কিমের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ঘ.   বিশেষায়িত শিল্প এলাকায় যুব উদ্যোক্তাদের প্রাধিকার দিতে হবে।

ঙ.   সুনীল অর্থনীতির (Blue Economy) সুযোগসমূহ বাস্তবায়নের সকল কার্যক্রমে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

চ.   যুব উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা-বিনিয়োগ সহযোগী ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করতে হবে।

১১.  যুব সমাজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ থাকতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা ২০১১-তে যুব সমাজের স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও পদক্ষেপ থাকতে হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্য নীতিমালা চূড়ান্ত করতে হবে।

১২. যুব নারী ও পুরুষদের মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করে মাদকের ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাদক প্রতিরোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. যুব পার্লামেন্ট গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যুব আইন ২০১৭ অনুসারে অবিলম্বে যুব কাউন্সিল গঠন করতে হবে।

১৪. যুব উন্নয়ন দপ্তরের যুব নেতৃত্ব ফোরাম আরও সক্রিয় ও প্রতিনিধিত্বমূলক হতে হবে এবং যুব উন্নয়ন দপ্তরের প্রশিক্ষণে এসডিজি সংশ্লিষ্ট বাধ্যতামূলক বিষয় থাকতে হবে।

১৫. জাতীয় বাজেট ও বিভিন্ন পরিকল্পনায় যুব সমাজের উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মকান্ডে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

১৬. যুব সমাজের জনমিতিক উপযোগের (demographic dividend) সুযোগ যথার্থভাবে নেওয়ার লক্ষ্যে যুব সমাজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য রাষ্ট্রকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

১৭. নিরাপদ সড়ক ও নিরাপদ যানবাহন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আইনি সংস্কার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৮. পরিবেশবান্ধব নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে এবং তার নিরীখে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হবে। যুব সমাজ পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে যেসব দাবিতে উচকিত, তার নিরীখে উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

১৯. যুব সমাজের উন্নয়ন ও সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত আইনসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং চাহিদার আলোকে এসব আইনের সংস্কার করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: জাতীয় যুব নীতি ২০১৭, জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধিত) আইন ২০১৩, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এবং এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২।

২০. যুব সমাজ যেন মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে একটি আলোকিত গণতান্ত্রিক পরিম-লে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ নিশ্চিত করতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন হবে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনায় প্রণীত সংবিধানের আলোকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রয়োগ ও মৌলিক অধিকার চর্চার সুযোগ – বিশেষ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সম্মিলিত হওয়ার অধিকার।

২১. তথ্য-প্রযুক্তির সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্যবহারকারী হিসেবে আমরা যুব সমাজ তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে বাক্-স্বাধীনার অধিকার সমুন্নত রাখার দাবি করছি। এ অধিকার হরণকারী কোনো আইন আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

২২. ভাবাদর্শ ও কর্মকান্ডে সকল ধরনের উগ্রবাদের আমরা বিরোধিতা করছি এবং জঙ্গিবাদ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

২৩. যুববান্ধব শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারণে যুব সমাজের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে:

ক.   তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সকল পর্যায়ের রাজনীতি, স্থানীয় শাসন ও কমিউনিটি কার্যক্রমে যুব সমাজের কার্যকর অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

খ.   রাষ্ট্রের সর্বস্তরে এসডিজি বাস্তবায়নের সাথে সম্পর্কিত সব কমিটিতে যুব সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এসব কমিটিতে যুব সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।

গ.   উপজেলা উন্নয়ন কমিটিতে যুব সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

২৪.       রাজনৈতিক কর্মকান্ডে যুব সমাজের অনৈতিক অপব্যবহার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা প্রদান করতে হবে।

২৫. রাজনৈতিক দলসমূহের নির্বাচনী ইশ্তেহারে যুব সমাজের অধিকার, উন্নয়ন ও দেশ গড়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম থাকতে হবে। এসবের নির্বাচনোত্তর নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

বাংলাদেশের যুব সমাজের প্রত্যাশা একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, যেখানে থাকবে যুব সমাজের গুণাবলী প্রকাশ ও বিকাশের অবারিত সুযোগ এবং যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আর্থ-সামাজিক বিচারে উন্নত, বণ্টনের ন্যায্যতায় প্রাণিত এবং মানবিক গুণাবলীতে সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ আমরা গড়বো – এ দৃঢ় প্রত্যয় আজকের এ সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষণা করছি। আমরা রাষ্ট্র ও সমাজের সার্বিক সহায়তায় আমাদের মেধা ও শক্তিকে কাজে লাগাবো, যার ফলে বদলে যাবে বাংলাদেশ।